কম্পিউটারের বিভিন্ন ক্ষেত্র বা ব্যবহার গুলো একবার হলেও দেখুন!
আজকের কম্পিউটার একটি আধুনিকইলেকট্রনিক যন্ত্র।
কম্পিউটারComputer শব্দটি ইংরেজি Computeশব্দ থেকে এসেছে। Compute শব্দেরঅর্থ গণনা করা আর Computer শব্দেরঅর্থ গণনাকারী যন্ত্র। পূর্বে কম্পিউটারদিয়ে শুধু হিসাব-নিকাশের কাজ করাহতো।
কিন্তু বর্তমানে আধুনিক কম্পিউটার দিয়ে অত্যন্ত দ্রুতগতিতেজটিল হিসাব-নিকাশের কাজ নির্ভুলভাবেকরা ছাড়াও বহু রকমের কাজ করা যায়।
কম্পিউটার দিয়ে সারা জীবনের হিসাবকয়েক মিনিটে করা সম্ভব। এটিঅনেকগুলো নির্দেশ নির্ভুলভাবে ও তড়িৎগতিতে নির্বাহ করতে পারে।
কম্পিউটারের নিজের কোন কাজ করারক্ষমতা নেই। কম্পিউটার আবিষ্কারকগণএবং ব্যবহারকারীগণই বলে দিচ্ছে তাকেকী করতে হবে এবং কেমন করে করতেহবে।
মূলত উপযুক্ত নির্দেশের প্রভাবেকম্পিউটার জড় পদার্থ হতে গাণিতিকশক্তিসম্পন্ন এক বুদ্ধিমান যন্ত্রে পরিণতহয়েছে।
... বিস্তারিত..........
একটু জটিল হলো তবে সাধারণ কথা হলো- কম্পিউটার কিছু ইলেক্ট্রনিকযন্ত্রাংশের সমষ্টি যা বিদ্যুৎ প্রবাহের মাধ্যমেও সফটওয়্যার এর সহায়তা নিয়ে সচলকরা হয় এবং চাহিদা অনুসারে ব্যবহারকরা হয়।
কম্পিউটার বর্তমান অবস্থায় একবারেআসেনি। এটি বিভিন্ন ধাপ বা পর্যায়েঅতিক্রম করে এসেছে। এই এক একটিধাপ বা পর্যায়কে এক একটি প্রজন্ম বাজেনারেশন বলে।
প্রতিটি প্রজন্মপরিবর্তনের সময় কিছু নতুন বৈশিষ্টসংযোজিত হয় এবং পুরনোবৈশিষ্ট্যগুলোর বিলুপ্তি ঘটে।কম্পিউটারকে প্রজন্ম হিসেবে ভাগ করারপ্রথা চালু হয় IBM কোম্পানির একটিবিজ্ঞাপন থেকে।
এ প্রজন্ম বিন্যাস নিয়েমতান্তর আছে। তবে ভালব, আসি-সি,ট্রানজিস্টর, মাইক্রোপ্রসেসর ইত্যাদি একএকটি প্রজন্ম নির্দেশ করে।
আধুনিক কম্পিউটারের ধারণা উপস্থাপনকরেন কেমব্রিজ বিশ্বদ্যালয়েয়র স্নাতকএবং পরবর্তীতে গণিতের লুকাসিয়ানঅধ্যাপক স্যার র্চালস ব্যাবেজ ১৮৩৮সালে।
এজন্য তাকে কম্পিউটারের জনকবলা হয়।
কিন্তু তার সময়ে উপযুক্তঅন্যান প্রযুক্তি না থাকায় তিনি তারপ্রস্তাবিত গণনাযন্ত্র পরিপূর্ণভাবে প্রদর্শনকরতে পারেনি।
র্চালস ব্যাবেজের ধারণার প্রতিফলনঘটিয়ে ১৯৪৪ সালে হাওয়ার্ড একিনেরনেতৃত্বে মার্ক-১ Mark-1 নামের ইলেক্ট্রনিককম্পিউটার আবিষ্কার হয়।
এইকম্পিউটারটি তৈরিতে কাজ করেছিলেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও বিখ্যাতআইবিএম কোম্পনির একদল বিজ্ঞানী।
কম্পিউটারের যে ভাবে কাজ করে থাকে-
সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্য ব্যবহারকারীকর্তৃক তৈরি প্রোগ্রাম (Programs)কম্পিউটার গ্রহণ করে মেমোরিতেসংরক্ষণ করে এবং ব্যবহারকারীরনির্দেশে কম্পিউটার প্রোগ্রাম নির্বাহ(Execute) করে।
কী-বোর্ড, মাউস, জয়স্টিক, ডিস্ক ইত্যাদিরমাধ্যমে কম্পিউটার ডেটা (Data) গ্রহণকরে।
ডেটা প্রসেস (Processor) করে
মনিটর, প্রিন্টার, ডিস্ক ইত্যাদির মাধ্যমেকম্পিউটার ফলাফল প্রকাশ করে ।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে কম্পিউটারের ব্যবহার-
১. ওয়ার্ড প্রসেসিং বা লেখা-লেখিরকাজে(আমাদের দেশেই মুলত) টাইপরাইটারের বিকল্প হিসেবে অফিসআদালতে কম্পিউটার ব্যবহৃত হয়।
২. অফিসের যাবতীয় ব্যবস্থাপনার কাজেআজকাল কম্পিউটার ব্যাপকভাবেব্যবহৃত হচ্ছে।
৩. বিভিন্ন ধরনের গবেষণামূলক কাজে।
৪. চিকিৎসা ও শিক্ষাক্ষেত্রে।
৫. একস্থান থেকে অন্যস্থানে সংবাদপ্রেরণের ক্ষেত্রে।
৬. বিনোদনের ক্ষেত্রে যেমন টিভি দেখা,ভিডিও দেখা ও গান বাজানো,উপস্থাপনা ইত্যাদি ক্ষেত্রে।
৭. যোগাযোগ ব্যবস্থার টিকিট বিক্রিথেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনেরট্রন্সপোর্টের ডিরেকশন ও গতিনির্ণয়ের কাজে।
৮. শিল্পক্ষেত্রে যন্ত্রপাতি পরিচালনা বানিয়ন্ত্রণের কাজেও কম্পিউটারব্যবহৃত হচ্ছে।
৯. মুদ্রণশিল্পে প্রকাশনামূলক যে কোনকাজে।
১০. আধুনিক সামরিক বাহিনীতেনিরাপত্তা রক্ষী হিসেবে ইত্যাদি
মূল কথা হলো আমাদের জীবনের প্রতিক্ষেত্রে আমরা এই প্রযুক্তির সাথে জড়িয়ে পড়েছি।
বর্তমান যুগ কম্পিউটাররের যুগ।আধুনিক সভ্যতায় কম্পিউটারের ব্যবহারদিন দিন বেড়েই চলেছে। বর্তমানেকম্পিউটার দিয়ে চিত্ত বিনোদন হতেমহাকাশযান নিয়ন্ত্রন পর্যন্ত সব কিছু করাহচ্ছে। নিম্নে কম্পিউটারের কিছু ব্যবহারউল্লেখ করা হলোঃ
১. অফিসের কাজ :
অফিসের যাবতীয়কাজ দ্রুত ও নির্ভূলভাবে কম্পিউটারদ্বারা করা যায়। অফিসের কাজবন্টন, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, চিঠিপত্রলেখা, রেকর্ড সংরক্ষণ, ফাইলরক্ষণাবেক্ষণ, দৈনিক আয়-ব্যয়েরহিসাব-নিকাশ ইত্যাদি কাজকম্পিউটার দ্বারা করা যায়।
২. ব্যাংকিংয়ের কাজে :
আধুনিক উন্নতবিশ্বে প্রতিটি ব্যাংক কম্পিউটার দ্বারানিয়ন্ত্রিত, চেকের হিসাব , ক্রেডিট ওডেবিটের হিসাব কম্পিউটার দ্বারাকরা হচ্ছে। এতে গ্রাহকদের চেকজমা দিয়ে অপেক্ষায় থাকার বিরক্তিদূর হচ্ছে
ব্যাংকে কম্পিউটারব্যবহরের ফলে একদিকে যেমনগ্রাহকগণ দ্রুত সেবা পাচ্ছেন তেমনিব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাকাজের চাপ থেকে মুক্তি পাচ্ছে।বর্তমানে কম্পিউটার নেটওয়ার্কেরমাধ্যমে প্রতিটি ব্যাংকের হিসাবকেন্দ্রীয় ব্যাংকে দ্রুত জানানো সম্ভবহচ্ছে।
৩. ব্যবসায়-বাণিজ্যের কাজে : ফান্ডট্রান্সফার, ব্যালেন্স সীট, হিসাবরক্ষণ,পে-রোল, আয়-ব্যয় হিসাব, ইত্যাদিকম্পিউটার দ্বারা দ্রুত সম্ভব।
৪. কল-কারখানার কাজে : কল-কারখানার যাবতীয় কাঁচামালআমদানির হিসাব, রপ্তানি দ্রব্যেরহিসাব, কর্মকর্তা ও শ্রমিক সংখ্যারহিসাব, শ্রমিক কর্মচারীদের মাসিকবেতনের হিসাব, বার্ষিক রিপোর্ট তৈরিও বার্ষিক বাজেট তৈরি প্রভৃতি কাজকম্পিউটার দ্বারা করা যায়।
৫. প্রকাশনার কাজে :
কম্পিউটার দিয়েদ্রুত গ্রফিক্স ডিজাইন, মুদ্রণ,গবেষণা রিপোর্ট, বই, চিঠিপত্রইত্যাদি প্রকাশিত হচ্ছে। যখনকম্পিউটারের ব্যবহার ছিল না, তখনবই প্রকাশ করা ছিল কঠিন, এতেপ্রচুর সময় ও অর্থ ব্যয় হতো।
৬. সংবাদপত্র :
কম্পিউটারের মাধ্যমে খুবদ্রুত সংবাদপত্র প্রকাশের বিভিন্নকাজ করা যায়। কম্পিউটারনেটওয়ার্ক-এর মাধ্যমে একটি দেশেরপ্রতিটি শহর থেকে একই সময়সংবাদপত্র বের করা হচ্ছে। এছাড়াও ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিশ্বেরযে কোন গ্রাহক সংবাদপত্রকম্পিউটারের পর্দায় পড়ে নিচ্ছেঅথবা প্রিন্টারের মাধ্যমে প্রিন্ট করেনিচ্ছে।
৭. টেলি কমিউনিকেশনের কাজে :
টেলিফোন এবং কম্পিউটারের মধ্যেসংযোগ করে অতি দ্রুত সংবাদপৃথিবীর একস্থান হতে অন্যস্থানেপাঠানো যাচ্ছে।
৮. চিকিৎসাবিজ্ঞানে :
প্যাথলজিক্যালপরীক্ষা, দৃষ্টিশক্তি পরীক্ষা, ক্যান্সাররোগ নির্ণয়, টিউমারের গঠন ইত্যাদিকাজে কম্পিউটার দ্রুত ফলাফলদিচ্ছে। বিভিন্ন রোগের ঔষধ নির্ধারণএবং ঔষধের মান নিয়ন্ত্রনকম্পিউটার দিয়ে করা হচ্ছে।
৯. মহাকাশ গবেষণার কাজে :
মহাকাশযানের সূক্ষ্ম হিসাব নিকাশ,ডিজাইন, এবং পরিচালনার কাজেকম্পিউটার ব্যাপকভাবে ব্যবহারকরা হচ্ছে। এছাড়াও দূর আকাশেনভোচারীর গতিপথ নির্দেশে সহায়তাকরে কম্পিউটার।
১০. প্রতিরক্ষার কাজে :
বোমারু বিমানবা যুদ্ধ জাহাজ নিয়ন্ত্রণ, মিসাইল ওক্ষেপণাস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি কাজেকম্পিউটার ব্যবহৃত হচ্ছে।
১১. বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণ :
বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের বিমানযোগাযোগ কম্পিউটার ছাড়া অচল।অনলাইনে সিট রিজার্ভেশন,বিমানের চলাচলের রুট নির্ধারণসহবিভিন্ন কাজে কম্পিউটার ব্যবহারকরা হচ্ছে।
১২. শিক্ষার কাজে :
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেরছাত্র-ছাত্রীদের বেতনের হিসাবনিকাশ, দ্রুত পরীক্ষার ফলাফলপ্রকাশ, প্রতি বর্ষে ছাত্র-ছাত্রীদেরসংখ্যার হিসাব ইত্যাদি কম্পিউটারদ্বারা করা সম্ভব। এছাড়া বছরঅনুযায়ী পাশ ও ফেল করা ছাত্র-ছাত্রীদের সংখ্যা কম্পিউটার দ্বারাকরা যায়।
১৩. বিনোদনের কাজে :
কম্পিউটারে গেমখেলা, গান শোনা, ছবি দেখা ইত্যাদিবিভিন্ন বিনোদনের জন্য কম্পিউটারব্যবহার করা হচ্ছে। টিভি কার্ডলাগিয়ে কম্পিউটারকে টিভিহিসাবেও ব্যবহার করা হচ্ছে।
১৪. আবহাওয়ার কাজে :
কম্পিউটারেরমাধ্যমে আবহাওয়ার বিভিন্ন ধরনেরতথ্য সংগ্রহ করে পূর্বাভাস দেওয়াযায়, যার দ্বারা আমরা কোনপ্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেতেপারে।
আজ এই পর্যন্তই।
ভালো থাকবেন।
ভুল হলে ক্ষমা করবেন।
সোমবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০১৭
বিভিন্ন ক্ষেত্রে কম্পিউটার এর ব্যবহার নিয়ে বিস্তারিত পোষ্ট।
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন