সোমবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০১৭

কম্পিউটারের গঠন ও বিভিন্ন অংশ পরিচিতি।(বেসিক নলেজ)

কম্পিউটারের অংশগুলো কি কি?
নিম্নে দেখুন।

কম্পিউটারের গঠনপ্রণালীঃ

একটি পূর্ণাঙ্গ কম্পিউটার তৈরি করতে দু’টো প্রধান অংশের প্রয়োজন হয়। সেগুলো হলো-

(১) হার্ডওয়্যার (২) সফটওয়্যার।

১) হার্ডওয়্যারঃ

 কম্পিউটার তৈরি করতে যেসব শক্ত জিনিষের ব্যবহার করা হয়েছে তার সবগুলোকেই হার্ডওয়্যার বলে।এক কথায় আমরা চোখের সামনে কম্পিউটারের যে সব ডিভাইস বা যন্ত্রগুলো দেখি তা সবই হার্ডওয়্যার।
যেমন- মনিটর, সিপিইউ,কীবোর্ড, মাউস ইত্যাদি হার্ডওয়্যারের অন্তর্গত। এই হার্ডওয়্যারের ভিত্তিতে কম্পিউটারকে আবার চারটি অংশে বিভক্ত করা যায়। সেগুলো হলো-

(ক)ইনপুট অংশ।

(খ)কেন্দ্রিয় প্রক্রিয়াজাত করণ অংশ।

(গ)মজুদ কেন্দ্র বা স্মৃতি অংশ।

(ঘ)আউটপুট অংশ।

(ক)ইনপুট অংশঃ যে অংশের সাহায্যে কম্পিউটারে কোন নির্দেশ বা তথ্য প্রবেশ করানো হয় সেই অংশকেই ইনপুট অংশ বলা হয়।
পরবর্তীতে সেই নির্দেশ বা তথ্যের ভিত্তিতেই কম্পিউটার যাবতীয় কাজ সম্পাদন করতে পারে।

বিভিন্ন মাধ্যমের সাহায্যে কম্পিউটারে তথ্য প্রবেশ করানো যায়। তবে এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো কীবোর্ড, মাউস, স্ক্যানার, জয়স্টিক, মাইক্রোফোন ইত্যাদি এবং এগুলো সবই ইনপুট অংশের অন্তরভুক্ত।

(খ)কেন্দ্রীয় প্রক্রিয়াজাতকরণ অংশঃ যে অংশে কম্পিউটারের যাবতীয় তথ্য পর্যবেক্ষণ, বিশ্লেষণ ও প্রক্রিয়াজাত করা হয় সেই অংশকেই বলা হয় কেন্দ্রীয় প্রক্রিয়াজাতকরণ অংশ।
এই অংশটি হলো কম্পিউটারের মূল বা প্রাণকেন্দ্র।আমাদের মস্তিষ্কের অভ্যন্তরে মগজ যেমন আমাদের সবধরণের কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করে-ঠিক তেমনি এই অংশ কম্পিউটারের অভ্যন্তরে সকল কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করে সেগুলোকে প্রক্রিয়াজাত করে।
তারপর সেই প্রক্রিয়াজাত করা তথ্যকে পাঠ উপযোগি করে প্রেরণ করে আউটপুট অংশে।

(গ)মজুদ কেন্দ্র বা স্মৃতি অংশঃ যে অংশে কম্পিউটারে প্রবেশ করানো তথ্যকে সংরক্ষণ করে রাখা যায় সেই অংশকেই মজুদ কেন্দ্র বা স্মৃতি অংশ বলে।
কম্পিউটারে কোন তথ্য প্রবেশ করিয়ে তার ফলাফল দেখলেই কাজ শেষ হয়ে যায় না।
সেগুলো জমা করে রাখারও প্রয়োজন হয়ে পড়ে।অনেক সময় কম্পিউটারে কাজ করার জন্য কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য বা নির্দেশ প্রদাণ করতে হয়।
এগুলো আগে থেকেই কম্পিউটারে প্রবেশ করিয়ে রাখা যায়।কম্পিউটারের এই স্মৃতিকে দু’টি প্রধান ভাগে ভাগ করা হয়।

(১)ভেতরের স্মৃতিঃ যে স্মৃতিধারক কম্পিউটার যন্ত্রের ভিতরে থাকে সেই স্মৃতিধারককে বলা হয় ভেতরের স্মৃতি।

এই স্মৃতি আবার দুই প্রকার।
যেমনঃ রিড অনলি মেমোরী বা রম ও র‌্যানডম একসেস মেমোরী বা র‌্যাম।

ক.রম
যে স্মৃতির মধ্যকার তথ্যকে কেবলমাত্র পড়া যায় কিন্তু কোন পরিবর্তন করা যায় না, সেই স্মৃতিকে বলা হয় রিড অনলি মেমোরী বা রম।

এই স্মৃতিকে আবার কম্পিউটার চালানোর প্রাথমিক স্মৃতিও বলা হয়ে থাকে।
সাধারণত: কম্পিউটার নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো এই ধরণের স্মৃতির মধ্যে কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য বা নির্দেশ স্থায়ীভাবে দিয়ে দেন।

খ.  র‌্যামঃ
যে স্মৃতির মধ্যকার তথ্যকে দেখা যায়, পাঠ করা যায় এবং প্রয়োজনে পরিবর্তন করা যায় সেই স্মৃতিকেই র‌্যানডম একসেস মেমোরী বা র‌্যাম বলে।
এই ধরণের স্মৃতি হচ্ছে অস্থায়ী। কারণ এই স্মৃতির মধ্যকার তথ্যকে ব্যবহারকারী তার ইচ্ছামত পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও পরিমার্জন করতে পারে।

(২)বাইরের স্মৃতিঃ কম্পিউটারের বাইরে যে মাধ্যমে কোন তথ্যকে সংরক্ষণ করা হয় সেই স্মৃতিকেই বলা হয় বাইরের স্মৃতি। এই স্মৃতি কম্পিউটারের যাবতীয় তথ্য সংরক্ষণ স্মৃতি।ব্যবহারকারী তার তথ্য কম্পিউটারে সরক্ষণ করতে চাইলে এই স্মৃতির সহযোগিতা বা সাহায্য নিতে হবে। এই স্মৃতির উদাহরণ হলো- হার্ডডিস্ক, ফ্লপিডিস্ক ইত্যাদি।
এই বাইরের স্মৃতিধারকগুলো সাধারণভাবে যে কোন কম্পিউটারেই ব্যবহার করা যায়। ইদানিং বাজারে বেশ কিছু নতুন ও উপযোগি বাইরের স্মৃতিধারক পাওয়া যাচ্ছে।
এরমধ্যে সিডি বা কম্প্যাক্ট ডিস্ক, এমও ডিস্ক, জিপ ডিস্ক, সুপার ডিস্ক ইত্যাদি।কিন্তু এধরণের স্মৃতিধারককে ব্যবহারের জন্য আলাদা ধরণের ডিভাইস বা ড্রাইভ দরকার হয়।

(ঘ) আউটপুট অংশঃ যে অংশে কম্পিউটারের যাবতীয় ফলাফল প্রদর্শিত হয় সেই অংশকেই বলা হয় কম্পিউটারের আউটপুট অংশ।

এই অংশটা কম্পিউটারের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই অংশে আমাদের যাবতীয় কাজের ফলাফল প্রদর্শিত হয়।
কম্পিউটারের ফলাফল প্রদর্শনের জন্য বিভিন্ন ধরণের ডিভাইস বা মাধ্যম রয়েছে।এরমধ্যে প্রাথমিক বা উল্লেখযোগ্য হলো মনিটর। কম্পিউটারের সামনে থাকা টেলিভিশনের মতো দেখতে এই যন্ত্রটির নাম মনিটর। মনিটরের পর্দায় আমাদের বা ব্যবহারকারীর যাবতীয় কাজের ফলাফল ফুটে উঠে।
এই মনিটরের অপর নাম ভিডিইউ বা ভিজ্যুয়াল ডিসপ্লে ইউনিট।
এছাড়া ফলাফল কাগজে প্রিন্ট করে নেওয়ার জন্য রয়েছে প্রিন্টার। শব্দের ফলাফল শোনার জন্য আছে স্পীকার ইত্যাদি।

২)সফটওয়্যারঃ সফটওয়্যার হলো কম্পিউটারের প্রাণশক্তি। কম্পিউটার চালাতে যে প্রাণশক্তি দরকার হয় তাকে সফটওয়্যার বলে।

মানুষের যেমন হাত, পা, কান, মাথা ইত্যাদি থাকলেই চলে না- তার সাথে থাকতে হয় প্রাণশক্তি। তেমনি শুধু হার্ডওয়্যার দিয়ে কম্পিউটার চলে না। একে চালাতে হলে চাই সফটওয়্যার।
হার্ডওয়্যার খালি চোখে দেখা যায় কিন্তু সফটওয়্যার দেখা যায় না।
কম্পিউটারে যে সমস্ত সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয়।

আজ এই পর্যন্তই।
ভালো থাকবেন।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ad 728x90